সংক্রমণ সাত হাজার ছুঁইছুঁই দেশে, করোনায় তৃতীয় মৃত্যু বাংলায়

উদ্বেগ বাড়ছে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। সাত হাজার ছুঁইছুঁই দেশের করোনা সংক্রমণ। আক্রান্তের বিচারে গোটা দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার খবর নেই। তবে এদিন একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বছর ৭৪’র এক বৃদ্ধের। হাওড়া সাঁকরাইলের বাসিন্দা তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা ছিল। সোমবার তাকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার মৃত্যু হয়। এই নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হল। সোমবার বিডন স্ট্রিটের মাধব দাস লেনের এক বাসিন্দার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তাঁরা শারিরীক আরও সমস্যা ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। বেলেঘাটা আইডিতে মারা গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। চলতি বছরে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয় আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত্যু হয় ৪৩ বছরের এক মহিলার। শেষ পাঁচ দিন তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কোমরবিডিটিও উল্লেখ করা ছিল ডেথ সার্টিফিকেটে। হৃদযন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা ছিল ওই মহিলার। এই নিয়ে বাংলায় তিন জনের মৃত্যু হল করোনা সংক্রান্ত কারণে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গোটা বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ছে। ভারততেও আক্রান্ত ৭ হাজার ছুঁইছুঁই। বিভিন্ন সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনা রুখতে রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। জানানো হয়েছে সংক্রমণ বাড়লে প্রস্তুত আছে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৭ জন। তবে বেসরকারি মতে, আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি বহু হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন করোনা আক্রান্ত বহু রোগী। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৮১৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে  সংক্রমিত হয়েছেন ৩২৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন দিল্লি, একজন কেরালা ও  একজন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা।  কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে সেখানে দেখা গেছে ঝাড়খণ্ডে করোনা আক্রান্ত মাত্র ৬জন। গত ২৪ ঘন্টায় ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়এছেন। এদিন সকালের কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য মতে দেশে মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রান্ত কারণে। এদিন বিকেলে বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে পশ্চিমবঙ্গেও একজনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রান্ত কারণে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৬৪৪ জন। এদিন কেন্দ্র্রীয় স্থাস্থ্য মন্ত্রক যে তথ্য প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে গত ২৪ ঘন্টায় কেরালায় নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৯৬ জন। সেরাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০৫৩ জন। আক্রান্তের নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে কেরালা। গুজরাটে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১০৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৯ জন। সংক্রমণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যটি। 
সংক্রমণের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে দিল্লি। সেখানে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৭ জন। মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯১ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে ৬১৩ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। নতুন করে গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ জন। রাজস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ১২৪ জন। একদিনে নতুন করে আক্রান্তের তথ্য নেই। তামিলনাড়ুতে করোনা আক্রান্ত ২০৭ জন। নতুন করে আক্রান্তের খবর নেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য জানাচ্ছে উত্তর প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ২২৫ জন। কর্ণাটকে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৫৫৯ জন। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৬ জন। 
ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ ছাড়াও, দেশে নতুন এক্সএফজি ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ভারতীয় সার্স-কোভ-২ জিনোমিক্স কনসোর্টিয়াম (আইএনএসএসিওজি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ইতিমধ্যেই ১৬৩ জনের শরীরে এক্সএফজি শনাক্ত হয়েছে।
আইএনএসএসিওজি’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এক্সএফজি সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে (৮৯),তামিলনাড়ু (১৬), কেরালা(১৫), গুজরাট(১১), ৬টি করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গে। সতর্ক থাকার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা জানাচ্ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।