বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন: ঘাটাল কলেজে দুর্নীতির অভিযোগে সরব এসএফআই

ঘাটাল কলেজে বিপুল পরিমাণ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন এসএফআই (SFI)-এর কর্মী ও সমর্থকরা। তাদের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) পরিচালিত একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে জাল রসিদ ব্যবহার করে ভর্তি ও সেমিস্টার পরীক্ষার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এসএফআই-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়েছে নকল রসিদ, যাতে বৈধ কলেজ অথরিটির কোনো স্বাক্ষর নেই। এসব রসিদে সই রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্থানীয় নেতা এবং বর্তমানে কলেজের গ্রুপ-ডি কর্মী সইদুল হকের। ফলে এসএফআই দাবি করেছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলেজে একটি আর্থিক দুর্নীতির সিন্ডিকেট চালাচ্ছে এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ঠকানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার এসএফআই-এর কর্মীরা কলেজ অধ্যক্ষের (Principal) কাছে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ডেপুটেশন দিতে গেলে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা কলেজ প্রিন্সিপালের গেটে তালা লাগিয়ে তাদের বাধা দেয়। সেই সময় দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা, যা পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয়।

এসএফআই-এর অভিযোগ শুধু ভর্তি প্রক্রিয়ায় সীমাবদ্ধ নয়। তারা জানায়, সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফি ৮৪০ টাকা হলেও ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে প্রায় ৩২০০ টাকা। এর কোনো রশিদ কলেজের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। এই দুর্নীতির দায়ও সরাসরি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উপর চাপিয়েছে এসএফআই।

তাদের আরও অভিযোগ, প্রতি বছর ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে কলকাতায় আয়োজিত সভায় যোগদানের জন্য যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়, তার খরচও কলেজের তহবিল থেকেই জোগাড় করা হয়। কেবল বাস নয়, সেই সফরের খাবারদাবারের খরচ হিসেবেও প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার বেশি ব্যয় হয়, যা কলেজের সাধারণ তহবিল থেকে অবৈধভাবে তোলা হয় বলে এসএফআই-এর দাবি।

এসএফআই-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে—

  • অবিলম্বে এই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক
  • জড়িত TMCP নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক
  • কলেজে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হোক
  • ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হোক

এসএফআই এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি রাখবে এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনের পথে হাঁটবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ছাত্র স্বার্থে, শিক্ষা ও স্বচ্ছতার পক্ষে – এসএফআই সর্বদা সোচ্চার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *